পটুয়াখালীর গলাচিপায় সরকারি খননকৃত খাল দখল করে অবৈধভাবে মাছ চাষের অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে। এর ফলে অল্প বৃষ্টিতে কৃষি চাষের ব্যাপক ক্ষতিসহ জলবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে পুরো বিল ডুবে যেতে চলেছে। জানা যায়,
গত কয়েক বছর ধরে অবৈধভাবে খাল দখল করে মাছ চাষ করে আসছে এলাকার কতিপয় ব্যক্তিরা। বর্ষা মৌসুমে খালে বাঁধ নির্মাণ করে আবদ্ধ করে রাখার ফলে অল্প বৃষ্টিতে নিচু এলাকায় বন্যার সৃষ্টি হয়। ধান চাষের জমি হাঁটু পানিতে ডুবে থাকে। এতে চাষের জমিতে বিভিন্ন কীটপতঙ্গ ধরে ধান চাষে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়। ভিটাবাড়িতে পানি জমে থেকে জলবদ্ধতা ও কাদার সৃষ্টি হয়ে মানুষের চলাচলে অসুবিধা হয়।
এভাবে খালের পানি চলাচলের বাধা সৃষ্টি করে উপজেলার আমখোলা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ভাংরা মৌজার ডাহরবুনিয়া মঙ্গলবারিয়া খাল প্রভাবশালীরা দখল করে রাখে। এবিষয় ওই এলাকার কৃষকদের পক্ষে নজরুল হাওলাদার মাননীয় সংসদ সদস্য এস.এম শাহজাদার কাছে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
মাননীয় সংসদ সদস্য বিষয়টি আমলে নিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী বাপাউ বোর্ড পটুয়াখালীকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেন। কৃষক বেলায়েত হোসেন বলেন, খালটি বাধ দিয়ে মাছ চাষ করায় আমাদের কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হয়। কৃষক মো. মিজান বলেন, আমরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবরে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছি।
স্যার বিষয়টি আমলে নিয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন। কৃষক মো. কাওসার বলেন, প্রভাবশালীরা প্রশাসনের বাধা মানছে না। তাদের গায়ের জোরে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। কৃষক নুর আলম বলেন, সেকান্দার আলী, নাজমুল, আব্দুল বারেক মৃধা, শাহ আলম, নিজাম সিং, আনিচ হাওলাদার খালের ভিতরে নেট জাল দিয়ে বেড়া দিয়ে মাছ চাষ করছে।
এযেন দেখার কেউ নেই। এ বিষয় নিয়ে মুঠোফোনে সেকান্দার আলী ও নাজমুল হাওলাদারের কাছে জানতে চাইলে তারা বিষয়টি এড়িয়ে যান। এ বিষয় নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মনির মৃধা বলেন, আসলেই ঘটনা সত্যি। তারপরও চৌকিদার পাঠিয়ে বিষয়টি দেখা হবে। আমখোলা ইউনিয়ন সহকারী তহশিলদার মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, কোনো অসাধু লোক অবৈধভাবে খাল দখল করে মাছের চাষ করে জলবদ্ধতার সৃষ্টি করলে কিংবা পানি চলাচলের বাধা সৃষ্টি করলে অবৈধ দখলদারির বিরুদ্ধে ভূমিসংক্রান্ত আইনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গলাচিপা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ.এস.আর.এম সাইফুল্লাহ বলেন, করোনা ভাইরাসের কারনে ঘটনাস্থলে যেতে পারিনি। অতি শীঘ্রই যাব। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কৃষকদের কৃষি কাজে ব্যাঘাত ঘটলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।